তুষারপাত ভালো লাগে সবারই, তবে যতক্ষণ তা মায়াবী ফ্লারীজের (Flurries) মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। সৈয়দ মুজতবা আলীর 'ছেড়া ছেড়া পেঁজা পেঁজা তুলোর মত' বরফ যখন পড়তে থাকে তার নাম ফ্লারী। মায়াবী সে দৃশ্য - ছেলে বুড়ো সবার প্রিয়। ফ্লারীজ ছাড়াও আরা অনেক রকমের বরফ সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অবস্থা আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ও বিপজ্জনক দুটি হচ্ছে ফ্রিজিং রেন, ও ব্লিজার্ড।

ফ্রিজিং রেন-এর সময় বৃষ্টির ফোটাগুলোই বরফের ফোটা হয়ে পড়ে এবং ১/২ ঘন্টায় সকল কিছু পিচ্ছিল শক্ত বরফে ঢেকে যায়। এ অবস্থায় জুতায় স্পাইক লাগিয়ে বের হলেও আছাড় খাওয়ার সম্ভাবনা ৫০% এর উপর। একরাত ফ্রিজিং রেন হলে পরদিন সকাল দশটার মধ্যে হাসপাতালগুলোতে অর্থোপিডিক বিভাগে ৩০০-৫০০ রোগী ভর্তি হয় আমার শহরে। সকল রোড বন্ধ করে দেয়া হয়, মানুষ আইস স্কেটিং করে রাস্তাগুলোয়।


ব্লিজার্ড হোল বরফের ঝড়। মরুভুমিতে যেমন বালির ঝড়, এখানে তেমনি বরফের ঝড় - একদিকে তুষারপাত, কনকনে ঠান্ডা, অন্যদিকে প্রবল বেগে ঝড়। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসে বরফকুচিতে। ঝড়ের বেগ ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার অতিক্রম করলে তার নাম হয় হোয়াইটআউট, অর্থাৎ তখন সবই সাদা ১০০ গজ দুরেও আর কিছু দেখা যায় না।

আজ সকালের দিকে আমাদের এখানে শুরু হয় ব্লিজার্ড। ঝড়ের বেগ ঘন্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার। আমি ব্লগেই ছিলাম, প্রায় সীল করা জানালায়ও সাঁই সাঁই শব্দ শুনে বুঝলাম বাইরে বাতাস হচ্ছে। ডেস্কটপের ওয়েদার উইগেট-এর দিকে তাকিয়েই জানলাম ব্লিজার্ড শুরু হয়েছে। উঠে গিয়ে জানালার বাইরের দৃশ্যের কয়েকটি ছবি ও সামান্য সময় ভিডিও করলাম।


প্রথম ছবি

অল্প দুরত্বেও ধোঁয়াটে হয়ে এসেছে সবকিছু







ব্লিজার্ড শেষ হওয়ার পর বের হলাম কিছু কেনাকাটার জন্য। সে সময় আরো কিছু ছবি তুললাম-


ঝড়ের ঝাপটায় এখানটায় আমার চোখের আন্দাজে ৮ ফিটের মত পুরু হয়ে বরফ এসে জমেছে


প্রধান সড়কের বরফ সরানো হলেও গলিপথ আর ফুটপাথের অবস্থা যাচ্ছেতাই





৬-৭ ফিট উচু বরফের স্তুপ





ফ্রস্টেড যাত্রী ছাউনি




ছাউনির বাইরের বসবার বেঞ্চি প্রায় ঢাকা পড়েছে স্তুপ বরফে


কাছের একটি কাইরোপ্র্যাকটিক ল্যাব

ব্লিজার্ডের সময় তোলা ভিডিও


দোকানের কাছে পৌঁছে দেখি একটি গাড়ি আটকা পড়েছে বরফে

0 comments:

Post a Comment