আমার প্রথম আলো ব্লগে যারা গিয়েছেন প্রোফাইলের ব্যানারে আমার মেয়ের অ্যানিমেটেড এই ছবিটি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন। অনেকেই তা খুব পছন্দ করেছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। দু'একজন সহব্লগার কিভাবে এটি করা যায় তাও জানতে চেয়েছেন। আমি তাদের কথা দিয়েছিলাম একটি পোস্ট দিয়ে চেষ্টা করবো কৌশলটির ওপর আলোকপাত করতে।
শুরুতেই বলে নেয়া ভাল, অ্যানিমেশনটি কোন ভিডিও থেকে নেয়া নয়, ৩টি স্থিরচিত্র থেকে তৈরী করা। যদিও ঘটনাক্রমে ছবি ৩টি অ্যানালগ ভিডিও ক্যামেরা থেকে সরাসরি ক্যাপচার কার্ডের সাহায্যে নেয়া (ডিজিটাল বা ফিল্ম ক্যামেরা দিয়ে নয়)। নিচের ৩টি ছবি আমার ব্যানার অ্যানিমেশনে ব্যবহার করেছি-
অ্যানিমেশন মাত্রই অনেকগুলো ছবি (ফ্রেম) পরপর দ্রুত দেখাবার ফলে ঘটে, এখানেও তাই। ধরুন যদি মাত্র দুটি ছবি দিয়ে আমি অ্যানিমেশনটি তৈরী করি, অ্যানিমেশনটির স্থায়িত্ব ১ সেকেন্ডে হয় এবং এই ১ সেকেন্ডে ১৫টি ফ্রেম দেখানো হয়, তাহলে প্রথম ও শেষ ফ্রেম দুটি হবে আমার মূল দুটি ছবি, মাঝের ১৩টি ফ্রেম হবে বানানো (সিনথেটিক)। শুরুর দিকের ফ্রেমগুলো হবে প্রথম ছবিটির কাছাকাছি দেখতে, শেষের দিকের ফ্রেমগুলো হবে শেষ ছবিটির কাছাকাছি। এভাবে প্রথম ছবিটি ধীরে ধীরে শেষ ছবিতে রূপান্তরিত হবে। নিচের ছবিতে প্রতিটি ফ্রেম আলাদা ভাবে দেখুন-
একটি ছবি থেকে ধীরে ধীরে আরেকটি ছবিতে রূপান্তরের এই প্রকৃয়াটির নাম মর্ফিং (Morphing)। যারা ম্যাক্রোমিডিয়া ফ্লাশ বা ডিরেক্টর নিয়ে কাজ করেন তারা এরকম একটি রূপান্তর প্রকৃয়া নিয়ে কাজ করেন, সেখানে একে বলা হয় শেপ টুইনিং (Shape Twining)। মর্ফিং বা টুইনিং ছবির যে পরিবর্তনের মাধ্যমে সাধিত হয় ডিজিটাল ইমেজ প্রসেসিং-এর ভাষায় তাকে বলে ওয়ার্পিং (Warping)। একটি ছবির কোন একটি নির্দ্দিষ্ট বিন্দু আরেকটি ছবিতে কোন বিন্দুর স্থানে যাবে তা নির্ধারণ করে দেয়া গেলে, ১ম ছবিটিকে warp করে ২য় ছবিতে রূপান্তর করা সম্ভব। এই বিন্দুগুলোকে বলে কন্ট্রোল পয়েন্ট, আর দুই ছবিতে তাদের আপেক্ষিক অবস্থান নির্ধারণ করার কাজটিকে বলে কন্ট্রোল পয়েন্ট রেজিস্ট্রেশন। খুব ভয়াবহ তাত্ত্বিক শোনালেও বিষয়টি খুব সহজ। নিচের ছবিটি দেখলেই তা পরিস্কার হবে।
লক্ষ্য করুন, উভয় ছবিতে বেশ কিছু কন্ট্রোল পয়েন্ট (সবুজ বিন্দু) নির্বাচন করা হয়েছে মুখমন্ডলের গুরুত্বপূর্ণ অংশে। দুটো ছবিতে তাদের অবস্থান একই নয়, একটু নড়ে চড়ে যাবে ছবির সাথে মিল রেখে। এই কাজটি করাই হোল কন্ট্রোল পয়েন্ট রেজিস্ট্রেশন। বাদবাকী কাজ সফটঅয়্যারই করে দেবে, অর্থ্যাৎ warping করে ১৩টি ফ্রেম তৈরী করা এবং ফ্রেমগুলোকে পরপর সাজিয়ে একটি অ্যানিমেশন তৈরী করে দেয়া।
অ্যানিমেশনটি মুভি ফাইল হিসাবেও সেভ করা যায়, তবে ওয়েবসাইটে ব্যানার হিসাবে ব্যবহারের জন্য অ্যানিমেশনটিকে সেভ করতে হবে অ্যানিমেটেড জিফ (.gif) ফাইল হিসাবে। ব্যাস!
আসল কথাই বলিনি, কি সফটঅয়্যার দিয়ে করবেন কাজটি? গুগলে Morphing Software দিয়ে সার্চ দিয়ে একগাদা পাবেন। তবে WinMorph ফ্রী, ব্যবহারের চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
Copyright 2010 সাইদুর রহমান চৌধুরী
Theme designed by Lorelei Web Design
Blogger Templates by Blogger Template Place | supported by One-4-All
0 comments:
Post a Comment