[ এই পদ্যটিতে বাংলা বর্ণমালার ১১টি স্বরবর্ণ, ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ ও একমাত্র প্রতিবর্ণ 'ৱ' সবকটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। 'ৱ' প্রতিবর্ণটির উচ্চারণ 'ওয়' ]
এক.
মায়ের ঠোঁটে চোখ পেতে রই, কান পেতে রই মা কি বলে,
ডাকছে, ওরে সোনা মণি, খাবার সময় যায়রে চলে।
কোমল হাতে জড়িয়ে গলা মায়ের মুখে গল্প শুনি
দস্যি ছেলে ভুত রাক্ষস নয়তো মাসী ঘুম 'পাড়ুনি'।
চোখ বুঁজে রই শুনবো বলে ছন্দ ছড়া সকাল সাঁঝে,
বুকের ভেতর ঢাক গুড়গুড়, কথারা সব পঙ্ক্তি ভাঁজে।
'মা' বলে ঐ এক আষাঢ়ে হঠাৎ করেই মুখটি খুলি,
এমনি করেই ফুটলো আমার মায়ের ভাষায় প্রথম বুলি।
মা ভেসে যায় কথার তোড়ে, যায় ভেসে তার রাজ্যপাট,
কথারা সব ভাসিয়ে নেয় ভাতের থাল কী ধানের মাঠ।
দুই.
এমনি করেই দিন কেটে যায়, কাটছিলো বেশ হেসে,
অনেক আষাঢ় পেরিয়ে সেদিন বর্গী এলো দেশে।
ফাগুন মাসেও বর্ষার মেঘ ঈশান কোণে ঘনে,
ঔষর সব উর্দিঅলার অন্য কিছু মনে।
'বাংলাদেশে বাংলা ভাষা চলবে না আর শোন্,
অন্য ভাষায় বলবি কথা, আর কটা দিন গোন্'।
তিন.
পাকিস্তানী জান্তা বলে 'দেশের ভাষা উর্দু হবে',
আমিও বলি 'এমন কথা, কেউ কোনদিন শুনেছে কবে'?
সেদেশ থেকে জিন্না মিঞাও এসেই বলে 'বাংলা নয়',
মায়ের কাছে শিখেছি বুলি 'ছেড়ে দেবো, তাই কী হয়'?
শুনেই চোখ পাকিয়ে ওরা বলে নাকি 'ৱো কন হ্যায়',
আমিও বলি, 'এ কোন শালা, বলব কী তা ঠিক করে দ্যায়'?
চার.
লাগলো দুদিক মুখোমুখি - বন্দুক আর ভালোবাসা,
বর্ণমালাই আমার শক্তি আমার গরব আমার আশা।
বুকের রক্ত দিয়েই সেদিন মায়ের ভাষা বলেছি হেসে,
দুঃখে আজো ঊষা ফোটে ঋতুরাজের বাংলাদেশে।
--
ফ্রেব্রুয়ারী ২১, ২০১০
Copyright 2010 সাইদুর রহমান চৌধুরী
Theme designed by Lorelei Web Design
Blogger Templates by Blogger Template Place | supported by One-4-All
0 comments:
Post a Comment