গতকাল এ বিষয়ক একটি লেখা দিয়েছিলাম, কোরবানীর বিভৎসতা(?) ও পশ্চিমা সমাজের পশুপ্রেম। আরো কিছু তথ্য ও ছবি সংযুক্তির ইচ্ছা থাকলেও লেখাটির কলেবর ছোট রাখার জন্য তা আর দেইনি। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে গতকালের লেখাটি বিপুল সংখ্যক পাঠককে আকৃষ্ট করেছে। হিট কাউন্টারের তথ্য অনুযায়ী লেখাটির ইউনিক ভিজিটর সংখ্যা আমার অন্য যে কোন লেখার প্রায় দ্বিগুনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, যাঁদের অনেকেই হয়তো কেবলই পাঠক। যাঁরা ব্লগার তাঁদেরও অনেকেই মন্তব্য লিখে আমাকে উৎসাহিত করেছেন। তাই আমার মনে হোল যে অংশটুকু গতকালের লেখা থেকে ছেঁটে ফেলেছিলাম, নুতন একটি পোস্টের আকারে তা দিয়ে দিলে বিপুল সংখ্যক পাঠকের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতাটুকু ঠিকঠাক প্রকাশ পাবে।
সুপ্রিয় ব্লগার ও পাঠক,
ঈদ মোবারক। আপনাদের ঈদের দিনটি ভালো কেটেছে আশা করি। মুসলিমদের ঘরে ঘরে নিজের বা অন্যের কোরবানীর পশুর মাংসও মজা করে খাওয়া দাওয়া হচ্ছে নিশ্চয়ই। দুর বিদেশে নিজে যে আনন্দে অংশগ্রহন করতে পারছিনা, আপনাদের আনন্দের কথা ভেবে তা ভুলে থাকারও চেষ্টা করছি।
আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়ত আছেন, যাদের হৃদয় অতি কোমল, তারা কোরবানীর পশু জবাইয়ের দৃশ্য সহ্য করতে পারেন না। এমনও কেউ কেউ আছেন, যারা মাংস সামনে দেখলে অসহায় পশুটির কথা মনে করে তা আর খেতেও পারেন না। অন্যের কথা বলি কেন, আমার নিকটাত্মীয়ের মধ্যেই এরকম দু'একজন আছে। এই কোমলমতি মানুষগুলোকে আপতত সহানুভূতি জানান ছাড়া আর কি করতে পারি ভেবে পাইনা। মনের ভেতর তাদের জন্য একধরনের ভালবাসা অনুভব করি।
দু'তিনটি ইমেল অ্যাকাউন্ট, সাথে চ্যাট আর স্কাইপ, কমপক্ষে ফেসবুক, সময় থাকলে ট্যুইটার-লিংক্ড্ইন - এ ছাড়া আজকাল আর কারো চলেই না। শ্লথ সময়ে সমস্যা নেই, কিন্তু ব্যস্ত সময়ে নিয়ম করে সবকটিতে সাইন-ইন করা, নুতন কি এলো সব তার ওপর চোখ রাখা কম ঝক্কি নয়। দিন দিন তাই জনপ্রিয় হচ্ছে ইউনিভার্সাল চ্যাট ক্লায়েন্ট নামে পরিচিত এক শ্রেণীর সফটওয়্যার। এদের কাজ হোল আপনার ডেস্কটপে বা সিস্টেম ট্রে-তে বসে থেকে কখন কে মেসেন্জারে সাইন-ইন সাইন-আউট করলো, কখন আপনার নুতন একটি মেল এলো, ট্যুইটারে যাদের ফলো করছেন তারা কখন কি ট্যুইট করলো, ফেসবুকে নুতন কি ঘটলো প্রায় তাৎক্ষণিক আপনাকে জানানো। এবার আপনি গুরুত্ব বুঝে ব্যবস্থা নিন।
যখন অন্য ভালো কিছু ছিলোনা, তখন আমার পছন্দ ছিলো ট্রিলিয়ান (Trillian), এখন পছন্দ ডিগস্বি (Digsby)। নিচের ছবিটি এর প্রধান ইন্টারফেসের। উইন্ডোটি টাস্কবারের মত অটো-হাইড করে রাখাও যায়।
এতে আপনি আপনার যে সব অ্যাকাউন্ট ম্যানেজ করতে পারবেন -
চ্যাট/মেসেণ্জারঃ Yahoo, Google Talk, MSN, ICQ, AIM, Jabber এবং Facebook Chat
ইমেলঃ Hotmail, GMail, Yahoo, AOL এবং যে কোন POP/IMAP মেল (যেমন- অফিসের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের, আইএসপির দেয়া মেল অ্যাকাউন্ট)
সোশাল নেটওয়র্কঃ Facebook, Twitter, MySpace এবং LinkedIn
আমার ডেস্কটপে ঘাপটি মারিয়া বসিয়া থাকা উইগেট নামীয় বস্তুটি দেখিয়া বুঝিলাম, শীত আসিয়াছে বলিবার সময় হয় নাই। আবহাওয়ার সংবাদে প্রকাশ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন, তাপমান আরামদায়ক অপেক্ষা ইষদুষ্ঞ। আমার দ্বিতীয় বাড়ী ব্যাংককের হট, হটার ও হটেস্ট সিজনের মধ্যে এখন হট সিজনটি চলিতেছে। লন্ডন ও টরন্টোবাসী সর্বদাই 'শীত শীত' বলিয়া কাতরাইতে থাকে, দেখিলাম উহাদের সত্যই শীত নামিয়াছে, যথাক্রমে ৭ ও ৬ ডিগ্রী অনুভব করা যাইতেছে। উত্তর মেরুর কাছে যে চার্চিল শহর, সেখানে শুণ্যের নিচে ৯ ডিগ্রী মালুম হইতেছে। আমার এখানে এখনো শীত তেমন করিয়া নামে নাই, শুণ্যের নিচে মাত্র ১৮ অনুভব হইতেছে। উহা -৩৫ এর নিচে নামিবার আগে 'শীত শীত' কহিলে শহরবাসী আমাকে খেদাইয়া দিবে। উল্লেখ্য, উইনিপেগ পৃথিবীর শীতলতম নগরী বলিয়া পরিচিত। এবং ছবিটি গতকাল রাত্রিতে সংরক্ষণ করা। |
এই যে আমি লিখছি, একই সময় শুনছিও। গান নয়, প্রধান প্রধান সংবাদপত্রগুলোর আজকের দিনের শিরোনাম - ব্যাকগ্রাউন্ডে আমার কম্পিউটার আমাকে পড়ে শোনাচ্ছে। খুব যে মনোযোগ দিতে হচ্ছে তা নয়, ক্যাচি কোন শিরোনাম কানে আসলে লেখা বন্ধ করে একবার দেখে নেবো বিষয় কি। কম্পিউটার ভিত্তিক এই প্রযুক্তির নাম টিটিএস বা টেক্সট টু স্পীচ - কৃত্রিম স্বর বা সিনথেসাইজ্ড ভয়েস প্রযুক্তির একটি অংশ। এটি থাকলে আপনাকে আর সমসময় ওয়েবসাইট, পিডিএফ বা ওয়র্ড ডকুমেন্ট পড়তে হবে না, যখন নিজের পড়তে ইচ্ছে হবে না কম্পিউটারকে বলবেন পড়ে দিতে। আমি বিশেষভাবে এর একজন ভক্ত, প্রায়ই পড়ে শোনানোর কাজ ছেড়ে দেই পিসি-র হাতে।
দ্বিতীয় প্রজন্মের স্বর প্রযুক্তি
(হাবিবুর রহমান প্রজন্মের স্বর এখন আর আমার সংগ্রহে নেই)
প্রথম আলো ব্লগে প্রকাশিত নবেম্বর ২২, ২০০৯
আজ রবিবার। আমার রাজত্বে রবির আভা কিরণ হয়ে এখনো ফোটেনি। ছুটির দ্বিতীয় দিন। কোন তাড়া নেই। সোমবারে কোন সভা নেই। প্রস্তুতির তাড়াও নেই। শীত প্রায় নেমে গেছে। বেড়নোর মৌসুমও শেষ। অন্তত পাঁচ মাসের জন্য। চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিচ্ছি। আর অলস বিছানায় আধশোয়া হয়ে লিখছি। মন চলে গেছে আমার ছোট্ট গাঁয়ে। শীতের রবিবার সকাল। স্কুল বন্ধ। শুধু ভোরের মক্তবে সুর করে কয়েকদন্ড কোরান পাঠ। এরপর সারা দিনমান অখন্ড সময় শুধুই আমার।
আজো সারাদিন শুধুই আমার। ছেলেবেলার কোন সাথী নেই আমার সময়ে ভাগ বসাবার। ছেলেবেলার কেন, নেই কোন বেলার সাথীরাই। আছে শুধু শতাব্দির বিষ্ময় এক কালো বাক্স। তার পর্দায় আমাকে দোলা দিয়ে যায় দশ সহস্র মাইল দুরে ফেলে আসা ভূমিতে নুতন করে পাওয়া একদল সাইবার সাথী।
কিছুকাল আগে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন রিডার্স ডাইজেস্ট বিশ্বের ছত্রিশ মহানগরে মানুষ কত নম্র-ভদ্র তার পরীক্ষা চালিয়েছিলো। সবচেয়ে বেশি আশি পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষ ভদ্র নগরের টাইটেল পেয়েছিলো ন্যুইয়র্ক, আর বত্রিশ পেয়ে সবার নিচে ছিলো মুম্বাই। তারা অবশ্য বলেনি সবচেয়ে অভদ্র নগর, তারা বলেছিলো 'সবচেয়ে কম সজ্জন'। ভারতের সবচেয়ে 'আধুনিক' নগরী বলে পরিচিত মুম্বাই-এর যদি এই হাল হয়, অন্য নগরীগুলোয় পরীক্ষাটি চালালে কি ফলাফল হতে পারত; তা বলতে যাওয়া একেবারেই অনুমাননির্ভর হয়ে যাবে। ঢাকার ব্যাপারেও তাই, কারণ এখানেও পরীক্ষাটি চলেনি। বলে নেয়া ভাল, যে নগরগুলো থেকে রিডার্স ডাইজেস্ট প্রকাশিত হয় শুধু সেগুলোই জরীপের আওতায় এসেছিলো।
Copyright 2010 সাইদুর রহমান চৌধুরী
Theme designed by Lorelei Web Design
Blogger Templates by Blogger Template Place | supported by One-4-All